সম্মানিত ভাই, স্ত্রীকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসুন। তারা প্রতিটা কাজকে নিয়ামত হিসাবে দেখুন। তার কোন খুঁত পছন্দ না হলে তাকে নাসীহা দিন, উপেক্ষা করুন কিন্তু তার সাথে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলিয়েন না। তার কাজে সহযোগিতা করুন, তার বান্ধবীর সাথে ফোনে কথা বলাকে সম্মান করুন, তার পরিশ্রমের প্রশংসা করুন, রান্নার তারিফ করুন, সংসার সামলানোর টেকনিকগুলোকে সম্মান দিন। দ্রুত করুন কাজগুলো।
নিয়তি আপনি জানেন না, জানেন না কাল বা পরশু আপনার এই আপাত অভ্যস্ত হাতে গড়ে তোলা সংসার ছারখার করে দিয়ে আপনার স্ত্রী যদি পরকালের বাসিন্দা হয়ে যান, আপনার আফসোসের সীমানা থাকবেনা। ওয়াল্লাহি, আল্লাহর ওয়াস্তে প্রতিটা বৈবাহিক সম্পর্ক একেকটা সম্পদ। চাঁদ, তারা, কাশফুল নয় – আলু, তেল, নুন, পেঁয়াজের মধ্যেই আসল রোম্যান্টিকতা লুকিয়ে আছে, ভালোবাসার খাজানা একে অপরের প্রতি সহমর্মিতায় লুকিয়ে আছে। স্ত্রীর সমস্ত স্বার্থত্যাগ মাথায় রাখুন। ঝামেলা বা রাগ হলে তার অজস্র ভালোকাজগুলো মনে করুন। ইনশা’আল্লাহ সুখী হবেন।
শ্রদ্ধেয়া বোন, স্বামীর খেদমত করুন। তার উপস্থিতি একটা অদৃশ্য বটগাছের ছায়ার মত। থাকলে বুঝবেন না কি শান্তি, না থাকলে বুঝবেন কি ক্লান্তি! স্বামীর দায়িত্ববোধ চশমার কাঁচের মত। কাছে এলে ঝাপসা, দূরে গেলে স্পষ্ট। দয়া করে, স্বামীর সাথে অন্য পুরুষের তুলনা করিয়েন না। তাকে যত্ন দিন, তার চশমা, হাতঘড়ি, পাঞ্জাবির খেয়াল রাখুন। নিজের বেপর্দা ছবি নন মাহরমের কাছে উন্মুক্ত করিয়েন না।
নিজের সুখী দাম্পত্যের কাহিনী অন্যের কাছে বর্ণণার কোন প্রয়োজন নেই।
আপনি জানেন না, যাকে বর্ণণা দিচ্ছেন, সে কত কষ্টের মধ্যে আছে, আল্লাহ না করুন তার নজর আপনার দাম্পত্যে এসে না পড়ে৷ বোন, এই দুনিয়ায় কোন মানুষ পারফেক্ট নয়৷ আপনিও নন, আপনার স্বামীও হয়ত নয়৷ পারফেক্ট হওয়ার জায়গা দুনিয়া নয়, আখিরাত। তাই জীবনের সমস্ত প্রত্যাশা তার দায়িত্বশীল কাঁধে জোর করে চাপায়েন না। স্বামীর কাছে বসুন, তার কথা শুনুন, একসাথে সালাত আদায় করুন, একপাতে খাওয়ার চেষ্টা করুন, আর তার অক্ষমতাকে সম্মান জানান তার হাজারো সক্ষমতা দ্বারা। স্বামীর অবাধ্য হয়েন না। স্বামী যদি কারো সাথে কথা বলতে নিষেধ করে তাই শোনেন। সে যদি আপনার প্রিয় বান্ধবী হয় তাও। কারন স্বামীরা বুঝতে পারে পথের কোন বাঁকে আপনার জন্য অনাগত বিপদ অপেক্ষা করছে। তাকে এই হিকমত আল্লাহর দেওয়া। তাই তার কথা শোনেন। যদি বিপদ নাও থাকে তবুও আপনি স্বামীর বাধ্য হওয়ার কারনে সওয়াব পাবেন ইনশা’আল্লাহ। আপনি জানেন না তাকদীরের কথা।
কাল এই প্রিয় মানুষটা কাউকে সুযোগ না দিয়ে টুক করে পাশ থেকে চলে গেলে, হাজার চাইলেও কিন্তু আর তাকে পাশে পাবেন না, আর মনে রাখবেন এই সমাজ ভরপুর সংসারী আপনাকে যতটা সম্মান দিচ্ছে, একলা আপনিকে ততটাই বোঝা ভাবতে দু’বার ভাববেনা। নিজের সংসারের প্রতি যত্নশীল হন, স্বামীর ইচ্ছেমত টুকটাক রান্না করুন, এই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুন হামেশাই। ইনশা’আল্লাহ সুখী হবেন।